আধুনিক যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিত্র-পরিচালক ডি সিকা-র মতে শুধু বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই কেন, সিনেমার জন্মের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত এমন কোনো শিল্পীর নাম তাঁর জানা নেই যাঁর প্রতিভা চ্যাপলিনের প্রতিভাকে ছাপিয়ে উঠেছে।
চার্লি চ্যাপলিন সম্পর্কে অনেকে বলে থাকেন যে যথেষ্ট বাস্তব-চেতনার অভাব রয়েছে বলেই তিনি যুগকে তাঁর শিল্প-মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফুটিয়ে তুলতে পারেন নি। অর্থাৎ ব্যক্তিকেন্দ্রিকতায় আবদ্ধ থাকার দরুন তিনি যুগের একটা চেহারাকে নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা সত্ত্বেও দেখতে পেলেন না আর একটা দিক, যেখানে মেলে নব জীবনের আস্বাদ। এ-কথা হয়তো ঠিক যে ব্যক্তি সীমানার মধ্যে অনেক সময়েই তিনি নিজেকে আটকে রেখেছেন, কিন্তু তাঁর শিল্পী-জীবনের প্রতি পদক্ষেপেই সেই সীমানার দেওয়াল ভেঙে গেছে বাস্তবের ঘাত-প্রতিঘাতে-নতুন পরিবেশে, নতুন পরিপ্রেক্ষিতে তিনি পৃথিবীকে দেখেছেন ও বদলেছেন। পরিবর্তনশীল কালের পরিবেশে চেতনার বিভিন্ন স্তরে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন অপরাজেয় শিল্পী চ্যার্লি চ্যাপলিন।
চ্যাপলিনের কর্মবহুল জীবনের পর্যালোচনা করতে গিয়ে এই জিনিসটাই আমি বারবার দেখেছি। দেখেছি যে চ্যার্লি চ্যাপলিনের সমস্ত শিল্পী-জীবনটাই হচ্ছে পৃথিবীতে মানবতাকে প্রতিষ্ঠিত করার এক বিরাট সংগ্রামের সুসংবদ্ধ ইতিহাস-যে সংগ্রামকে তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন বাস্তবে।
Book Name : | চার্লি চ্যাপলিন |
Authors : | মৃণালসেন |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 2nd Edition, September 2022 |
ISBN Number: | 978-984-91187-5-6 |
Total Page | 0 |
মৃণাল সেন পূর্ববাংলার ফরিদপুরের সন্তান। জন্মেছেন ১৪ মে ১৯২৩ সালে। স্কুলপর্ব শেষে ভর্তি হন কলকাতার স্কটিশচার্চ কলেজে। পোস্ট গ্রাজুয়েট করেন পদার্থবিদ্যায়। দেশভাগের পর রয়ে যান ওখানেই। ভারতীয় গণনাট্য সংঘের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৫৫ সালে প্রথম ছবি, তৃতীয় ছবি ‘বাইশে শ্রাবণ’ থেকে তাঁর আত্ম—অভিজ্ঞান খুঁজে পাওয়া। প্রথম হিন্দি ছবি ‘ভুবন সোম’ ভারতীয় সিনেমায় একটি মাইল ফলক। ২০০২ সালে তাঁর শেষ ছবি ‘আমার ভুবন’। ‘পদ্মভূষণ’—এর পাশাপাশি পেয়েছেন সিনেমার সর্বোচ্চ উপাধি ‘দাদাসাহেব ফালকে’। টেলিফিল্ম, শর্টফিল্ম এবং ডকুমেন্টারি ফিল্ম বাদ দিলে তিনি ২৯টি পূর্ণদৈর্ঘে্যর কাহিনিচিত্র নির্মাণ করেন। অনুবাদ করেছেন ক্যারল চ্যাপেকের ‘চীট’। চার্লস চ্যাপলিনের ওপর বাংলা ভাষায় প্রথম গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ৬টি চলচ্চিত্রবিষয়ক মৌলিক গ্রন্থ রয়েছে তাঁর। মৃণাল সেন বাংলা ভাষা ছাড়াও হিন্দি, ওড়িয়া ও তেলেগু ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। চলচ্চিত্রের এই দিকপাল ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে ৯৫ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত অসুখে মৃত্যুবরণ করেন।