লালন ছিলেন অবিভক্ত বঙ্গের মানুষ। সুতরাং তিনি পূর্ব পশ্চিম উভয় প্রান্তের বাউলদের পূর্বপুরুষ বা পূর্বসূরী। শুধু বাউলদের কেন, সকলেরই। লালন তাঁর দশ হাজার শিষ্যকে কী উপদেশ দিতেন তা জানবার আর কোনো উপায় নেই, একমাত্র উপায় তাঁর গান। লালনের গানই তাঁর বাণী। এই গ্রন্থ লালন—চর্চা এবং লালনের নির্বাচিত গানের একটি মূল্যবান সংকলন। লালন—চর্চা বিষয়ক প্রবন্ধগুলির মধ্যে লালন ফকিরের জীবনের নানা দিক আলোকিত হয়েছে। লালন ফকির এবং তাঁর গান সম্বন্ধে এমন বই বাংলা সাহিত্যে এ যাবৎ দুর্লভ।
Book Name : | লালন ফকির ও তাঁর গান |
Authors : | অন্নদাশঙ্কর রায় |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, February 2017 |
ISBN Number: | 978-984-91186-1-9 |
Total Page | 96 |
অন্নদাশঙ্কর রায় (জন্ম ১৫ মার্চ ১৯০৪) ছদ্মনাম, লীলাময় রায়। পিতা নিমাইচরণ ও মাতা হেমনলিনী। জন্ম ওড়িশার ঢেঙ্কানলে এবং প্রথম জীবনে ওড়িয়া ভাষায় সাহিত্যচর্চা করে বিশেষ খ্যাতিলাভ করেন। ওড়িয়া সাহিত্যে প্রসিদ্ধ ‘সবুজ’ গোষ্ঠীর অন্যতম কবি ছিলেন অন্নদাশঙ্কর। শেষ পর্যন্ত তিনি বাংলাতেই লেখার সিদ্ধান্ত নেন। অন্নদাশঙ্কর মননশীল লেখক; তাঁর উপন্যাস, গল্প, প্রবন্ধ ও ভ্রমণকাহিনি সর্বত্রই এই মননশীলতার প্রাধান্য। তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘তারুণ্য’ (১৯২৮) কয়েকটি প্রবন্ধের সমষ্টি। ‘বিচিত্রা’য় প্রকাশিত ইউরোপ ভ্রমণকাহিনী পথে প্রবাসে (১৯৩১) তাঁকে পাঠক—পাঠিকা সমাজে প্রতিষ্ঠিত করে। তাঁর ‘সত্যাসত্য’ (১৯৩২—১৯৪২) নামক উপন্যাসধারা বাংলাসাহিত্যে স্মরণীয় গ্রন্থ। এই উপন্যাস ষট্কের কাহিনিÑ ‘যার যেথা দেশ’ (১৯৩২), ‘অজ্ঞাতবাস’ (১৯৩৩), ‘দুঃখমোচন’ (১৯৩৩), ‘কলঙ্কবতী’ (১৯৩৪), ‘মর্তের স্বর্গ’ (১৯৪০) ও ‘অপসারণ’ (১৯৪২)Ñভারতবর্ষ ও ইউরোপ ব্যাপ্ত এবং রাজনীতি, সমাজ, দর্শন নানা সমস্যা গ্রন্থিত। পরে ‘রত্ন ও শ্রীমতী’ (১৯৫৬—৭২) নামে আরেকটি মহা—উপন্যাস লেখেন অন্নদাশঙ্কর। বৈদগ্ধ্যের সঙ্গে পরিহাসপ্রিয়তা তাঁর রচনার একটি বৈশিষ্ট্য। ‘আগুন নিয়ে খেলা’ (১৯৩৩), ‘পুতুল নিয়ে খেলা’ (১৯৩৩), ‘না’ (১৯৫১), ‘কন্যা’ (১৯৫৩) প্রভৃতি গল্পগ্রন্থের মধ্যে অন্নদাশঙ্করের প্রতিভাব উজ্জ্বল পরিচয়। অন্নদাশঙ্কর কয়েকটি প্রতিভার উজ্জ্বল পরিচয়। অন্নদাশঙ্কর কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেনÑ ‘রাখী’ (১৯২৯), ‘বসন্ত’ (১৯৩২), ‘কামনাপঞ্চবিংশতি’ (১৯৩৪) উল্লেখযোগ্য। তাঁর ভাষা স্পষ্ট ও পরিশীলিত, তাঁর মন মুক্ত এবং উদার, তাঁর চিন্তা পরিচ্ছন্ন এবং তীক্ষè। তিনি বাংলাসাহিত্যের অন্যতম কথা—কুশীল এবং নিপুণ প্রবন্ধকার। তবে যে—জন্য তিনি বাংলা সাহিত্যে অদ্বিতীয় তা তাঁর ছড়া প্রাচীন ছড়ার আঙ্গিককে তিনি এক আধুনিক মনের বাহনে পরিণত করেছেন। ‘উড়কি ধানের মুড়কি’ (১৯৪২), ‘রাঙাধানের খৈ’ (১৯৫০) প্রভৃতি ছড়ার বই বাংলাসাহিত্যের স্থায়ী সম্পদ। ‘ছড়া সমগ্র’ (১৯৪৮) তাঁর রচিত ছড়ার সংকলন। মৃত্যু : ২৮ অক্টোবর ২০০২