সময় : সত্তরের দশক। স্থান : পশ্চিমবঙ্গ। প্রেক্ষাপট : নকশালবাড়ি আন্দোলন। শুধুই খতমের রাজনীতি নয়। সত্তর বাংলা সাহিত্যেও এনেছিল অনন্য বদল। শ্রেষ্ঠতম নিদর্শনটি ১৯৭৪ সালেই প্রকাশিত হয়। র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কারে ভূষিত মহাশ্বেতা দেবীর হাজার চুরাশির মা। খালেদ চৌধুরীর প্রচ্ছদে।
এ আখ্যান সুজাতার। যিনি কঠোর। বিপ্লবী ব্রতীর মা। লাশকাটা ঘরে যার ছেলে পেয়েছিল নতুন পরিচয়। একটি সংখ্যা, ১০৮৪। তাই তো সুজাতা, হাজার চুরাশির মা। যাকে রাষ্ট্র বলে দিয়েছে ছেলেকে ভুলে যেতে। যে ছেলে ছিল বিপ্লবে বিশ্বাসী। অকুতোভয়, আপসহীন। মহাশ্বেতা চিরকাল ছিলেন সমবেদনা, সমতা এবং ন্যায্য বিচারের কণ্ঠস্বর। ব্রতী-বিশ্বাসী ছিলেন নতুন ধরনের ইতিহাস নির্মাণে। তাই তো তাঁর কলমে ‘সুজাতা’ হয়ে ওঠেন পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে ভিন্নমাত্রার দরদী প্রতিবাদের প্রতীক। মহাশ্বেতার কলমে উত্তাল এক সময়ের সঙ্গে একজন মাও পাড়ি দেন বহুদূর, বড় একলা পথ। উপন্যাসটি অবলম্বনে গোবিন্দ নিহালনির নির্মিত চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৯৮ সালে। জয় করে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। রাজনীতিসঞ্জাত বহুমুখী বাঙালির উজ্জ্বলতম সাহিত্যিক-অ্যাক্টিভিস্ট প্রতীক ছিলেন মহাশ্বেতা। এ উপন্যাসের জন্যই পেয়েছেন জ্ঞানপীঠ পুরস্কার। তাঁর লেখাতে মহাকাব্যিক বিস্তারে উঠে আসে রাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রবিরোধীরা। উঠে আসে প্রশ্নমুখর তারুণ্যকে দলে-পিষে-থেঁতলে দেওয়ার কথাও। গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরাও না হলেও নকশালবাড়ির আগুন যে বাংলার একটি ঘরকেও ছাড়েনি সে কথা পাঠককে স্মরণ করিয়ে দেয় হাজার চুরাশির মা।
Book Name : | হাজার চুরাশির মা |
Authors : | মহাশ্বেত দেবী |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, October 2023 |
ISBN Number: | 978-984-97729-8-9 |
Total Page | 88 |
মহাশ্বেত দেবী জন্ম ১৪ জানুয়ারি ১৯২৬ সালে, ঢাকায়। মা ধরিত্রী দেবী। বাবা মনীশ ঘটক। প্রথম গল্প সংকলন কি বসন্তে কি শরতে প্রকাশিত হয় ১৯৫৯ সালে। বিগত প্রায় ছয় দশক ধরে বাংলা তথা ভারতীয় সাহিত্যে একটি অবশ্য-উচ্চার্য নাম। শুধু ‘নাম’ই বা কেন, একটি প্রতিষ্ঠান- সমাজকর্ম ও সাহিত্য সাধনার যুগল মিলনকেন্দ্র। যা বাংলা সাহিত্যে অনন্য, ভারতীয় সাহিত্যে দুর্লভ, বিশ্বসাহিত্যেও সুলভ নয়। সাহিত্য আকাদেমি, জ্ঞানপীঠ, র্যামন ম্যাগসাইসাই, সার্ক সাহিত্য পুরস্কার ও অন্যান্য সম্মাননায় অভিনন্দিত তাঁর জীবনসাধনা। প্রধান প্রধান ভারতীয় ভাষা ছাড়াও তাঁর গ্রন্থ অনূদিত হয়ে চলেছে ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান, জাপানি ও ইতালীয় ভাষায়। স্বামী বিশিষ্ট নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্য, একমাত্র পুত্র বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক নবারুণ ভট্টাচার্য। তিনি ২৮ জুলাই ২০১৬ সালে কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।