ঢোঁড়াই চরিত মানস উপন্যাসটি ১ম খণ্ড ১৯৪৯ ও ২য় খণ্ড ১৯৫১ সালে প্রকাশিত হয়। বিহারের শহর জিরানিয়া, তার থেকে কিছু দূরে তাৎমাটুলি। তাৎমাদের বৃত্তি ঘরামি আর কুয়োর বালি ছাঁকা। তারা জাতে তাঁতি। তবে পাশেই ধাঙ্গড়টুলি। এই পরিবেশে পিতৃহীন, মাতৃ পরিত্যক্ত ঢোঁড়াই বড় হয়। এই তাৎমা ঢেঁাড়াইকে লেখক গড়ে তুলেছেন রামচন্দ্রের নতুন সংস্করণ করে। স্বাধীনতা আন্দোলনের শেষ পর্ব এর কাল—পরিধি। সমাজের নিম্নতম স্তরে রাজনৈতিক চেতনা কীভাবে প্রবেশ করে বদলে দেয় মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, পরিবর্তিত করে এক ঢোঁড়াইকে ‘রামায়ণজী’তে, তার এক অসাধারণ আখ্যান এই গ্রন্থ। এই কাহিনিতে অন্তর্লীন হয়ে আছে তুলসীদাসের রামচরিতমানস। রাজনীতি ও সমাজ পরিবর্তন ও সমাজের অন্ত্যজ মানুষের বিশ্বস্ত রূপায়ণ এবং রামচরিতমানসের সঙ্গে আধুনিক কাহিনির অন্তর্বয়ন এই তিনদিক থেকে এই আখ্যান বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রচনাগুলোর অন্যতম।
Book Name : | ঢোঁড়াই চরিত মানস |
Authors : | সতীনাথ ভাদুড়ী |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, February 2021 |
ISBN Number: | 978-984-94933-1-0 |
Total Page | 320 |
সতীনাথ ভাদুড়ী। ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯০৬ সালে পূর্ণিয়ায় জন্ম, শিক্ষা—দীক্ষা এবং কর্মজীবন। প্রসিদ্ধ ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার। ওকালতি ছিল তাঁর বৃত্তি, পরে কংগ্রেসের কর্মীরূপে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন। রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে কয়েকবছর ভাগলপুর জেলে থাকেন। অগাস্ট আন্দোলনের পটভূমিকায় রচিত উপন্যাস জাগরী (১৯৪৬) প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আলোড়নের সৃষ্টি করে। তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ঢেঁাড়াই চরিত মানস (১ম খণ্ড ১৯৪৯, ২য় খণ্ড ১৯৫১) সতীনাথের শ্রেষ্ঠরচনা হিসেবে সমালোচক মহলে নন্দিত। তুলসীদাসের রামচরিতমানস এই উপন্যাসের অন্তর্লীন গঠন। পূর্ববিহারের সাধারণ মানুষের সুখদুঃখ, এক সাধারণ মানুষের সামাজিক—রাজনৈতিক ঘটনাচক্রের মধ্য দিয়ে নায়ক হয়ে ওঠার ইতিবৃত্ত এই মহাকাব্যের মতো বিস্তৃত ও জটিল উপন্যাসটিকে এক অসামান্য মহিমা দিয়েছে। সতীনাথের অন্যান্য রচনার মধ্যে অচিন রাগিণী (১৯৫৪), সংকট (১৯৫৭), দিগ্ভ্রান্ত (১৯৬৬) এবং চকাচকী (১৯৫৪), গণনায়ক প্রভৃতি ছোটগল্প এবং সত্যভ্রমণ কাহিনী (১৯৫১)—ফরাসি দেশ ভ্রমণ বৃত্তান্ত—উল্লেখযোগ্য। সতীনাথ আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক। মানবজীবন সম্বন্ধে অন্তদৃর্ষ্টি এবং তাঁর তীক্ষè সংবেদনশীল কথনভঙ্গি তাঁকে বিশিষ্টতা দিয়েছে। ৩০ মার্চ ১৯৬৫ সালে এই মহান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন।