“বাঙলা চিরদিনই কবিতার দেশ। একমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বৈচিত্র্যই বাঙালিকে কবি করেনিÑ তার কবিপ্রতিভার মূলে মননরীতির বৈশিষ্ট্যও সমানই পরিস্ফুট। বাঙলার আকাশে নিদাঘ রৌদ্রের নিষ্ঠুর দীপ্তি, আষাঢ়ের ঘন বর্ষার মেঘসম্ভারের মধ্যে ঐশ্বর্য্য ও মহিমা এবং শ্রাবণের দিবারাত্র অবিরাম বর্ষণধারার সঙ্গীতে হৃদয়াবেগের প্রতিচ্ছবি। ষড়ঋতুর বিচিত্র নৃত্যলীলা যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা জানেন যে বাঙালির কবিমানসের উৎস কোথায়।
সামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে বাঙলার কাব্যধারার বিস্ময়কর বিকাশের পরিপূর্ণ পরিচয় দেয়ার দিন আজও বোধ হয় আসেনি। তার জন্য ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক ও সামাজিক যে তথ্য সঞ্চয়ের প্রয়োজন তাও আজ পর্যন্ত অসমাপ্ত। সে বিষয়ে অভাববোধও বেশি দিনের কথা নয়। অথচ সেই পশ্চাদপটের অভাবে বাঙলার কাব্যে বাঙালির মানসের বিকাশ পুরোপুরিভাবে বোঝা যায় না, কারণ ব্যক্তির মধ্যে সমাজমনের প্রকাশেই কাব্যের জন্ম। পশ্চাদপটের সেই অভাব পূরণের চেষ্টায়ই বর্তমান ক্ষুদ্র গ্রন্থখানির উদ্ভব।”
Book Name : | বাঙলার কাব্য |
Authors : | হুমায়ুন কবীর |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, August 2020 |
ISBN Number: | 978-984-94933-6-5 |
Total Page | 72 |
হুমায়ুন কবীর ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯০৬ সালে অবিভক্ত বাংলার ফরিদপুরে, বর্তমান বাংলাদেশের কোমরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খান বাহাদুর কবিরুদ্দিন আহমদ তার পিতা। একজন ভারতীয় বাঙালি শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, লেখক ও দার্শনিক। তিনি দুই দফায় ভারতের শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম দফায় জওহরলাল নেহেরুর মন্ত্রিসভায় এবং এর পরবর্তীকালে আরেকবার। এছাড়া তিনি বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি চতুরঙ্গ পত্রিকার সম্পাদক। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ সাথী (১৯৩০), স্বপ্নসাধ (১৯২৭), অষ্টাদশী (১৯৩৮) প্রভৃতি। নদী ও নারী নামক তার একটি উপন্যাস রয়েছে। ইমানুয়েল কান্ট (১৯৩৯), বাংলার কাব্য (১৯৪২), মোসলেম রাজনীতি (১৯৪৩) প্রভৃতি প্রবন্ধগ্রন্থ রচনা করেছেন। স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ভাষা এবং মৌলিক চিন্তায় হুমায়ুন কবীরের রচনাগুলো সমৃদ্ধ। ১৮ আগস্ট ১৯৬৯ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।