সংস্কৃতিচর্চা আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের অন্যতম বিষয় ছিল। তাঁর ভাষাচর্চা প্রকৃতপক্ষে সংস্কৃতিচর্চারই ফল। বাঙালির সংস্কৃতির বৈচিত্র্য তাঁকে কৌতূহলী করেছিল। সমাজতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ববিদ্যায় তাঁর অগাধ জ্ঞান বাঙালির সংস্কৃতির নানা উপাদান ও অজানা তথ্য উদ্ধারে সাহায্য করেছিল। বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির প্রতি তাঁর ভালোবাসা ও জ্ঞানের পরিচয় তিন খণ্ডে প্রকাশিত সাংস্কৃতিকী এবং ভারত-সংস্কৃতি গ্রন্থে বিধৃত হয়ে আছে। বাঙালিজাতির প্রাণের অভীপ্সাকে সুনীতিকুমার তথ্যসহযোগে উপস্থাপিত করেছেন তাঁর গ্রন্থগুলিতে। বিশেষভাবে লক্ষ করার বিষয় হলো, ভারতসংস্কৃতির সঙ্গে বঙ্গসংস্কৃতির যোগাযোগের সূত্রটি সুনীতিকুমারের মনীষায় কীভাবে ধরা পড়েছিল তার বিস্তৃত বিবরণে।
তিন খণ্ডে সাংস্কৃতিকী গ্রন্থ প্রকাশিত হলে সুনীতিকুমার এই পর্যায়ে আরও অন্তত দুটি খণ্ডের পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি নিজেই বিভিন্ন সময়ে লেখা অগ্রন্থিত বঙ্গসংস্কৃতিচর্চামূলক রচনা সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। এই কাজে সহায়তা করেন অনিল কাঞ্জিলাল।
এই সংগ্রহ থেকে বিষয় ও ভাবনার দিক থেকে ঐক্য আছে এমন ছটি নির্বাচিত প্রবন্ধ নিয়েই এই গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। বেল্নসের চিত্রগুলি সংগ্রহ করতে সাহায্য করেছেন নিখিল সরকার।
বিভিন্ন সময়ে রচিত এই প্রবন্ধগুলিতে সুনীতিকুমার যে যতিচিহ্ন রেখেছেন এবং সাধু বা চলিত ভাষা ব্যবহার করেছেন আমরা তা অপরিবর্তিত রেখেছি।
Book Name : | বাঙ্গালীর সংস্কৃতি |
Authors : | সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, August 2019 |
ISBN Number: | 978-984-94239-0-4 |
Total Page | 64 |
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় জন্ম ২৬ নভেম্বর ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে। প্রসিদ্ধ ভাষাতাত্ত্বিক, বহুভাষাবিদ মনীষী। হাওড়ার শিবপুরে জন্ম। পিতা হরিদাস চট্টোপাধ্যায়। সুনীতিকুমার ইংরেজিতে রচিত The Origin and Development of the Bengali Language (১৯২৬) গ্রন্থের জন্য পণ্ডিত সমাজে চিরশ্রদ্ধেয়। ভাষাতত্ত্বের বিভিন্ন বিষয়ে তিনি অজস্র প্রবন্ধ রচনা করেছেন। বাংলা ভাষায় রচিত গ্রন্থাদির মধ্যে দ্বীপময় ভারত (১৯৪০), ইউরোপ (১৯৩৮), ইউরোপ ভ্রমণ (১ম খণ্ড ১৯৩৮, ২য় খণ্ড ১৯৪৫), সাংস্কৃতিকী (১ম খণ্ড ১৯৬১, ২য় খণ্ড ১৯৬৫) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। বিচিত্র তথ্যে পরিপূর্ণ, কিন্তু তথ্যক্লিষ্ট নয়, সহজ সরল আন্তরিক ভাষায় লেখা এই গ্রন্থগুলি অত্যন্ত সুখপাঠ্য। তাঁর আত্মজীবনী জীবন—কথা (১৯৭৯) তাঁর মৃত্যুর পরে প্রকাশিত। তিনি ২৯ মে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে পরলোক গমন করেন।