মানুষের মনে সময়ে সময়ে জীবন—জগৎ, ইহকাল— পরকাল, আত্মা—পরমাত্মা, জড় প্রকৃতি— মনোজগৎ প্রভৃতি দুর্জ্ঞেয় ও জটিল বিষয়ে প্রশ্ন জাগে। দর্শন ও বিজ্ঞানের আলোকে এসব প্রশ্নেরই আলোচনা করা হয়েছে এই গ্রন্থে। এটি নানা নামে চিহ্নিত এগারোটি রচনার সংকলন হলেও একটি কেন্দ্রীয় বক্তব্যের প্রতিষ্ঠাই লেখকের মূল লক্ষ্য। সেই বক্তব্যটি হচ্ছে সমগ্র বিশ্বব্রহ্মাণ্ডব্যাপী ‘চৈতন্যের সর্বময়তা’। বস্তুত লেখকের দর্শনভাবনার ভিত্তিই রচিত হয়েছে ‘বিশ্বময় চেতনার’ অস্তিত্বের ওপর। এই চেতনা ও তার প্রাণলীলার প্রকাশ লেখকের মতে কেবল জীবজগতে নয়, জড়জগতেও নিয়ত উপস্থিত। এক গোপন কিন্তু সচেতন প্রেরণার বশবর্তী হয়ে জগৎ—জীবনের সবকিছু অস্তিত্বমান। কেবল দুর্জ্ঞেয় বিষয়ে নয়, এ বইয়ে প্রত্যক্ষীভূত সামাজিক মানুষের ধর্মও নির্ণিত হয়েছে ওই বোধ—বিশ্বাস থেকেই। আর সেই ধর্ম হচ্ছে সার্থকতা সঙ্কীর্ণ ব্যক্তিত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখা নয়, তাকে সকল মানুষের মধ্যে পরিব্যাপ্ত করে দেওয়া। লেখকের আশা ও বিশ্বাস যে, সত্য—ধর্মের এই উপলব্ধি যেদিন মানুষের মধ্যে জাগবে সেদিন পৃথিবীতে হয়তো এমন এক বিরাট গণতন্ত্রের উন্মেষ ঘটবে যেখানে একের অধিকার অন্যের দ্বারা দলিত হবে না, যেখানে ‘উৎপীড়িতের ক্রন্দনরোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না।’
Book Name : | মানুষের ধর্ম |
Authors : | মোহাম্মদ বরকতুল্লাহ্ |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, February 2021 |
ISBN Number: | 978-984-95041-8-4 |
Total Page | 128 |
১৮৯৮ সালের ২ মার্চ সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানার ঘোড়শাল গ্রামে মোহম্মদ বরকতুল্লাহর জন্ম। রাজশাহী কলেজ থেকে দর্শনে বিএ অনার্স (১৯১৮) ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে এমএ (১৯২০)। বিএল ডিগ্রিও অর্জন করেছিলেন। ১৯২২ সালে বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ এবং ১৯৫৫ সালে ডেপুটি সেক্রেটারি হিসেবে অবসরগ্রহণ। এ বছর বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি বিশেষ কর্মকর্তার দায়িত্ব পান। একাডেমির পরিকল্পনা রচনায়ও তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। পরে তিনি একাডেমির সচিব ও সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। লেখক হিসেবে বরকতুল্লাহর খ্যাতি প্রতিষ্ঠিত রয়েছে প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ পারস্য প্রতিভা—র ওপর। মানুষের ধর্ম তাঁর দ্বিতীয় বিশিষ্ট বই। এরপর লেখার জগতে বাঁক—বদল ঘটে। একে একে লেখেন কারবালা ও ইমাম বংশের ইতিবৃত্ত, নবীগৃহ সংবাদ, নয়াজাতি স্রষ্টা হযরত মুহম্মদ ও হযরত ওসমান। ১৯৭৪ সালের ২ নভেম্বর বরকতুল্লাহর জীবনাবসান হয়।