মানুষের আদিপাপ বলে যদি কিছু থাকে তবে সে হচ্ছে লোভ। এই লোভের প্রকারের যেমন শেষ নেই তেমনি এর মাত্রারও সীমা নেই। সেই সঙ্গে এর কোনো শ্রেণিবিশেষও নেই। প্রতিটি মানুষ তার অন্তশ্চেতনায় একে লুকিয়ে রেখে যেন পরম যত্নে লালন করে। বাইরে থেকে অনেক সময়ই তা বুঝে—ওঠা যায় না। তাই হদ্দ গরিব মফিজ, যে কি না নিতাই কুণ্ডুর ‘বলদ’ নামে গ্রামের লোকের কাছে অভিহিত, কুণ্ডুর পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে হাতিমার্কা একটা প্রাচীন মুদ্রা পেয়ে স্বপ্ন—বাসনার বিরাট ইমারত গড়ে তুলেছিল। কিন্তু তার চকচকে শাণিত অস্ত্রের মতো লোভ শেষাবধি অন্য লোভাতুর মানুষের হাতে তার ট্রাজিক বিনাশ ঘটায়। কুণ্ডুর পুকুরে মহার্ঘ্য মুদ্রা পাওয়ার খবর চাউর হলে রাতের অন্ধকারে গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ দলে দলে নিবারণ হয়ে শীতের বরফঠাণ্ডা পানিতে নামে পালট মুদ্রা পাওয়ার আশায়। এই আশা আসলে সেই লোভ। অন্যদিকে মকবুল আর পরান কুণ্ডুর বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে এক বস্তা চালে সন্তুষ্ট না হয়ে যে—ই দ্বিতীয় বস্তায় হাত বাড়ায় অমনি তাদের বিপদ ঘটে। এই সব লোভের ঘটনাপরম্পরায় লড়াই শুরু হয় কুণ্ডুপক্ষের সঙ্গে সর্বহারা শ্রেণির। সেই লড়াইয়ের এক ইতিবাচক ইঙ্গিতধর্মী কাহিনি রূপায়িত হয়েছে শাহ্যাদ ফিরদাউসের পালট মুদ্রা উপন্যাসে।
হাবিব আর রহমান
Book Name : | পালট মুদ্রা |
Authors : | শাহ্যাদ ফিরদাউস |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, August 2017 |
ISBN Number: | 978-984-92879-4-0 |
Total Page | 96 |
জন্ম ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৫০। প্রথম জীবনে কবিতা লিখতেন। পরবর্তীকালে সিনেমা এবং উপন্যাসের বিষয়ে আগ্রহী হন। কয়েকটি তথ্যচিত্র এবং গৌতম বুদ্ধর জীবন ও অহিংসা—দর্শনের ওপর একটি কাহিনিচিত্র তৈরি করেন। এছাড়া সামাজিক কাজের সঙ্গেও তিনি ছোটবেলা থেকে যুক্ত। বর্তমানে কলকাতার রুশ দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গোর্কি সদন—এর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত সাহিত্য সংগঠন প্রগতি সাহিত্য সংবাস—এর সম্পাদক। বিশ্বের শান্তি আন্দোলনকে ভারতীয় প্রেক্ষাপটে জোরদার করার লক্ষ্যে সমমনা সাথীদের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত কলকাতা পীস্ মুভমেন্ট—এর সম্পাদক। জাতপাত—ধর্ম—বর্ণ ও অন্যান্য সামাজিক বৈষম্যের ঊর্ধ্বে উঠে কীভাবে শিশুদের অন্তরে শান্তির বীজ বপন করা যায় তার চর্চা ও প্রয়োগের জন্য তিনি শিক্ষাবিদ বন্ধুদের নিয়ে পীস্ স্কুল নামে একটি ব্যতিক্রমী শিক্ষালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। ১৯৯৩ সালে ব্যাস উপন্যাস প্রকাশের মাধ্যমে তিনি নতুনভাবে সাহিত্যজগতে ফিরে আসেন। তারপর থেকে এ পর্যন্ত কুড়িটি উপন্যাস লিখেছেন। তাঁর রচনা পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচির অন্তভুর্ক্ত, কিছু তরুণ গবেষক তাঁর উপন্যাস নিয়ে ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন।