একদা বহুল-পঠিত কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের সদ্ভাবশতক-এর নাম আজকের শিক্ষা-গর্বিত বাঙালি কয়জন জানেন এ জিজ্ঞাসা অবান্তর নয়। আজকের স্কুল-কলেজে নবীন শিক্ষার্থীদের উক্ত কবি ও কাব্যের নাম জানানোরও প্রয়োজন বোধ কেউ করেন বলে মনে হয় না। অথচ পরাধীন যুগে উনিশ শতকের ষাটের দশক থেকে দীর্ঘকালব্যাপী কাব্যখানি স্কুলের বালক-বালিকাদের পাঠ্য ছিল। কেননা আমাদের পূর্বপুরুষেরা তাঁদের সন্তানদের নৈতিক ভিত্তি নির্মাণের আত্যন্তিক দায় বোধ করতেন। সে উদ্দেশ্য সাধনে সদ্ভাবশতক-এর ভূমিকার কথা তাঁরা যেমন জানতেন, তেমনি বুঝতেনও। এখনকার আত্মকেন্দ্রিক ও আত্মসর্বস্ব শিক্ষিত সমাজের কাছে তাঁরা ‘এক দূরতর দ্বীপ’। হন্তারক আত্মবিস্মৃতির কবল থেকে আমরা সবাই যেন নতুন করে জেগে উঠতে পারি-সেই মহৎ এষণা মনের মধ্যে ধারণ করে বহুকাল পরে ভুলে যাওয়া সৎ ভাবের এই পুনঃপ্রকাশ।
Book Name : | সদ্ভাবশতক |
Authors : | কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, February 2015 |
ISBN Number: | 978-984-90757-7-6 |
Total Page | 0 |
কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার। জন্ম: সেনহাটি গ্রাম, খুলনা, ১৮৩৪ (২৯ জ্যৈষ্ঠ ১২৪১)। কবি ও সাংবাদিক। পিতার নাম: মাণিকচন্দ্র মজুমদার, মাতা: ব্রহ্মময়ী দেবী। গ্রাম্য পাঠশালায় বাল্যশিক্ষা গ্রহণ। শৈশবে পিতার মৃত্যু হলে ঢাকায় তাঁর এক জ্ঞাতি গৌরচন্দ্র দাসের (ঢাকা জজ কোর্টের উকিল) কাছে আশ্রয় গ্রহণ। ঢাকা নর্মাল স্কুলে বিদ্যাশিক্ষা। বরিশালের কীর্তিপাশা বাংলা বিদ্যালয়ের প্রধান পণ্ডিত পদে যোগদান। কিছুদিন পরে এ চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে আবার ঢাকায় প্রত্যাবর্তন। ঢাকা নর্মাল স্কুলে পণ্ডিত পদে নিযুক্তি লাভ। স্কুল পরিচালনার ব্যাপারে কতৃর্পক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ ঘটায় শিক্ষকতার কর্ম থেকে পদত্যাগ। মাসিক ‘মনোরঞ্জিকা’ (১৮৬০) ও মাসিক ‘কবিতা কুসুমাঞ্জলি’ (১৯৬০) পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত। ১৯৬১ তে সাপ্তাহিক ‘ঢাকা প্রকাশ’ প্রকাশিত হলে এর সম্পাদকের পদে যোগদান করেন। এ সময়ে ব্রাহ্মধর্ম ও ব্রাহ্মসমাজের প্রতি অনুরাগ প্রকাশ। এ নিয়ে পত্রিকার স্বত্ত্বাধিকারীর সঙ্গে মতানৈক্য দেখা দিলে সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ। সাপ্তাহিক ‘বিজ্ঞাপনী’ (১৮৬৫) পত্রিকার সম্পাদক নিযুক্ত। প্রায় দেড় বছর এ পদে দায়িত্ব পালন। অতঃপর ‘ঢাকা প্রকাশে’র মালিকের অনুরোধে পুনরায় এর সম্পাদনার দায়িত্ব গ্রহণ। কিছুদিন পর ঢাকা ত্যাগ করে সেনহাটি গমন। এর পর যশোর জেলা স্কুলের প্রধান পণ্ডিত নিযুক্ত (১৮৭৪)। এখানে ১৮৯৩ পর্যন্ত শিক্ষকতা করার পর অবসর গ্রহণ। যশোরে অবস্থানকালে ‘দ্বৈভাষিকী’ (১৮৮৮) নামক একখানি ‘সংস্কৃত—বাংলা’ মাসিক পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদনা। অবসর জীবনে সেনহাটিতে বসবাস। উপদেশ ও নীতিমূলক কবিতা রচনায় প্রতিভার পরিচয় দেন। ‘সদ্ভাবশতক’ (১৮৬১) তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। তাঁর দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘মোহভোগ’ (১৮৭১) মহাভারতের ‘নহুষ’ উপাখ্যান অবলম্বনে নাটকাকারে রচিত। ‘রামের ইতিবৃত্ত’ (১৮৬৮) কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদারের আত্মজীবনীমূলক রচনা। মৃত্যু: সেনহাটি, ১৯০৭ (২৯ পৌষ ১৩১৩)।