শহীদ কাদরী কবি হিসেবে পাঠকদের কাছে রীতিমতো কিংবদন্তি হলেও তাঁর গদ্যকার-সত্তা সম্বন্ধে অনেকেই অবগত নন। বিষয়ের বৈচিত্র্য, বিশ্লেষণের ধার ও ভাষার স্বাতন্ত্র্যের নিরিখে কাদরীর গদ্য তাঁর কবিতার মতোই বিশিষ্ট, ঋদ্ধ। যেন মনন-সৃজনের বিরল নিখুঁত যুগলবন্দি। ‘গদ্যসংগ্রহ’-এ অপ্রাপ্যতার আড়াল থেকে প্রথমবারের মতো একত্রিত হলো শহীদ কাদরীর প্রায় অর্ধশত দুর্লভ গদ্যরচনা। এই সংকলন আক্ষরিক অর্থেই এক উজ্জ্বল উদ্ধার।
Book Name : | গদ্যসংগ্রহ । শহীদ কাদরী |
Authors : | শহীদ কাদরী |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition December 2024 |
ISBN Number: | 978-984-99198-4-1 |
Total Page | 168 |
১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকায় শহীদ কাদরীর জন্ম। ১৯৪৬—এর দাঙ্গা ও ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশভাগের পর শহীদ কাদরীদের পরিবারটি পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে পূর্ববঙ্গে আসার উদ্যোগী হলেও দেশ ছাড়ে ১৯৫২ সালে। তাঁর বাবা খালেদ ইবনে আহমেদ কাদরী সেই সময়ের ‘জুটবোর্ড’—এর চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৫০ সালে শহীদ কাদরীর বাবার মৃত্যু হলে নানা টানাপোড়েন শেষে শহীদ কাদরীর মা মাহমুদা কাদরী তিন সন্তান নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। অন্য দুই সন্তান হলেন শাহেদ কাদরী, নাফিজা কাদরী। এরপর প্রায় তিন দশক শহীদ কাদরী ঢাকা শহরে অবস্থান করেন। ১৯৭৮ সাল থেকে তাঁর প্রবাস জীবন শুরু হয়। তিনি বার্লিন, লন্ডন, বোস্টন এবং মৃত্যুর পূর্বপর্যন্ত নিউইয়র্কে বসবাস করেছেন। বিচিত্র পেশায় সংশ্লিষ্ট হলেও কোথাও বেশি দিন থিতু থাকেননি। মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে শহীদ কাদরী প্রথম কবিতা ছাপা হয় বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত কবিতা পত্রিকায়। তার দীর্ঘ কাব্যজীবনে প্রকাশিত কাব্যের সংখ্যা ৪টি। পঁচিশ বছর বয়সে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্য উত্তরাধিকার (১৯৬৭)। এরপর ১৯৭৪ সালে তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা, কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই এবং প্রবাসে থাকাকালীন বেরোয় আমার চুম্বনগুলো পেঁৗছে দাও (২০০৯)। এই চারটি গ্রন্থে সন্নিবেশিত কবিতার সংখ্যা ১২২টি। পরবর্তীতে তিনি আরও চারটি কবিতা লেখেন। বাংলা কবিতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য শহীদ কাদরী বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৩), একুশে পদক (২০১১) লাভ করেন। শহীদ কাদরী ২০১৬ সালের ২৮ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।