ঋত্বিক কুমার ঘটক তাঁর যৌবনের উন্মেষের সঙ্গে সঙ্গেই নিজেকে একজন সিরিয়াস সাংস্কৃতিক কর্মী রূপে গড়ে তোলার কাজে মগ্ন হন এবং প্রগতি-সংস্কৃতির বিকাশে সে সময়ে আরও অনেকের মতো তিনিও ব্রতী হন। শিল্পমাধ্যমের বিভিন্ন দিকের সঙ্গে তাঁর ছিল নিবিড় সম্পর্ক। এই জন্যেই পরবর্তীকালে বিভিন্ন শিল্পমাধ্যমে তিনি অনায়াস-বিচরণ করতে পেরেছেন।
‘গল্পভারতী’-তে প্রকাশিত তাঁর প্রথম গল্পে নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় যাঁকে একজন শক্তিমান নবীন লেখক রূপে পরিচয় করিয়ে দেন; সেই ঋত্বিকের সাহিত্যজীবনের শুরু ১৯৪৭-এ রাজশাহীতে প্রকাশিত ‘অভিধারা’ পত্রিকা সম্পাদনার মধ্য দিয়ে। পরে কলকাতাতেও তাঁরই সম্পাদনায় ‘অভিধারা’র কয়েকটি সংখ্যা বেরোয়। রাজশাহীতে প্রকাশিত একটি সংখ্যা এবং কলকাতার একটি সংখ্যা সংগ্রহ করা গেছে। অন্যান্য সংখ্যাগুলো খুঁজে পেলে হয়তো ঋত্বিকের সাহিত্যকর্মের আরও নতুন কিছু সংযোজিত হবে। ‘দেশ’, ‘অগ্রণী’, ‘শনিবারের চিঠি’, ‘নতুন সাহিত্য’ এবং নানা পত্রিকায় তাঁর গল্প প্রকাশিত হয়।
Book Name : | ঋত্বিক ঘটকের গল্পসংগ্রহ |
Authors : | ঋত্বিক কুমার ঘটক |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, February 2016 |
ISBN Number: | 978-984-91927-9-4 |
Total Page | 0 |
জন্ম : ৪ নভেম্বর, ১৯২৫ সালে পূর্ববঙ্গের ঢাকা শহরের ঋষিকেশ দাস লেনে। তিনি বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এবং নাট্যকার ও গল্প লেখক। দেশভাগের পরে তাঁর পরিবার কলকাতায় চলে যায়। ভিন্নধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণের কারণে তিনি যেমন প্রশংসিত ছিলেন; ঠিক তেমনি বিতর্কিতও। তাঁর মায়ের নাম ইন্দুবালা দেবী এবং বাবা সুরেশ চন্দ্র ঘটক। ১৯৪৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে তিনি আইএ এবং ১৯৪৮ সালে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৫০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এমএ কোর্স শেষ করেও পরীক্ষা দেননি। ১৯৫১ সালে তিনি ভারতীয় গণনাট্য সংঘে যোগদান করেন। এসময় তিনি নাটক রচনা, পরিচালনা ও অভিনয় করেন এবং বের্টোল্ট ব্রেশ্ট ও নিকোলাই গোগোল—এর রচনাবলি বাংলায় অনুবাদ করেন। ঋত্বিক ঘটক ১৯৬৫ সালে স্বল্প সময়ের জন্য পুনেতে বসবাস করেন। এসময় তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেন ও পরবর্তীতে ভাইস—প্রিন্সিপাল হন। চলচ্চিত্র নাগরিক (১৯৫২, মুক্তি ১৯৭৭), অযান্ত্রিক (১৯৫৮), বাড়ি থেকে পালিয়ে (১৯৫৮), মেঘে ঢাকা তারা (১৯৬০), কোমল গান্ধার (১৯৬১), সুবর্ণরেখা (১৯৬২), তিতাস একটি নদীর নাম (১৯৭৩), যুক্তি তক্কো আর গপ্পো (১৯৭৭)। সাহিত্যকর্ম দলিল (১৯২৫), জ্বালা (নাটক), চলচ্চিত্র, মানুষ এবং আরও কিছু (১৯৭৬), ঋত্বিক ঘটকের গল্প (১৯৮৭)। সম্মাননা ১৯৬৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৭৫ সালে যুক্তি তক্কো আর গপ্পো চলচ্চিত্রের কাহিনীর জন্য ভারতের জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন।