বাঙালি পাঠকের জন্য টনি মরিসনের রচনা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি জগৎকে নিয়ে আসবে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে আমেরিকায় দাসপ্রথা বিলুপ্ত হলেও বিংশ শতাব্দীর একটা বড় অংশ জুড়ে কৃষ্ণাঙ্গ সমাজ তার সংবিধান-প্রদত্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে থাকে। ইতিহাসের সেই বঞ্চনা ওই সমাজকে এমন গভীরভাবে আঘাত করে যে তার উঠে দাঁড়াতে কষ্ট হয়, মরিসনের আখ্যান এই প্রেক্ষাপটে রচিত। কিন্তু সেটি কোনো রাজনৈতিক নথি নয়, বরং সত্যের সুতো থেকে সূক্ষ্মভাবে বোনা এক জটিল নকশিকাঁথা যা কিনা কৃষ্ণাঙ্গ সমাজ ও তার অনুষঙ্গ হিসেবে শ্বেতাঙ্গ সমাজের স্তরগুলোকে একে একে উন্মোচন করেছে। তাঁর চরিত্ররা পরিশীলিত নয়, তাঁদের আবেগ আদিম, তাদের দুর্বলতা হৃদয়বিদারক, অসহায়তা অসহনীয়। মরিসনের অন্বেষণে এই জটিল নকশি বুননের এক পাশে আলো, অন্য পাশে অন্ধকার, যেখানে নিপীড়ণের আইডিয়া ছাড়িয়ে কৃষ্ণাঙ্গ-মার্কিন অভিজ্ঞতার এক বহুমাত্রিক বর্ণালি উপস্থাপনা রচিত হয়েছে, যাকে ঃৎধহংপবহফবহঃধষ বলা যায়। সেখানে একদিকে রয়েছে ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব, প্রেম, হঠকারি সিদ্ধান্ত অথবা বিশ্বাসঘতকতা, অন্যদিকে আছে পারিবারিক ও সামাজিক গতিময়তার মধ্যে সমন্বয় ও সংঘর্ষ। আমার বিশ্বাস ‘সুলা’ আমাদেরকে অনেক বাঁধাধরা ধারণার বাইরে নিয়ে আসবে, বাঙালি পাঠকের জন্য এটি যেমন প্রাসঙ্গিক তেমনই প্রয়োজনীয়, তাঁর নিজের সমাজটিকে আতস কাচ নিয়ে দেখার জন্য।
Book Name : | সুলা |
Authors : | টনি মরিসন |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, February 202৪ |
ISBN Number: | 978-984-98813-7-7 |
Total Page | 160 |
টনি মরিসন বিশ্বজুড়ে কিংবদন্তিতুল্য একজন সাহিত্যিক। সৃজনশীল প্রতিভার স্বীকৃতি হিসেবে সাহিত্যের সর্বোচ্চ পুরস্কার অর্জনের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয়ভাবেও হয়েছেন সম্মানিত। একজন প্রতিভাময়ী বিদ্বান বা খ্যাতিমান সাহিত্যিক, এটুকুই তাঁর পরিচয় নয়। সমাজ-রাজনীতি সচেতন, নিজের জনগোষ্ঠীর একজন প্রতিনিধিত্বকারী সাহসী বক্তা এবং অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে ছিলেন প্রথমসারির একজন পরিচিত ও সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারজয়ী প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান লেখক হিসেবে টনি মরিসনের কাজ লেখকদের একটি প্রজন্মকে তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করতে অনুপ্রাণিত করেছে। টনি মরিসন ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওহিওর লোরেইন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। চার ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তাঁর পুরো নাম ক্লোয়ি এ্যান্থনি ওফ্ফর্ড (Chloe Anthony Wofford)। তিনি এমন একটি মিশ্র জনবসতিপূর্ণ পরিবেশে বেড়ে ওঠেন যেখানে বর্ণবৈষম্য নিরন্তর যাতনা হিসেবে চলমান ছিল।