১৯৭৮ এর আগস্ট মাসের এক শনিবার ভোর রাতে মহেন্দ্র নাথ একটা স্বপ্ন দেখে জেগে উঠলেন। দেখলেন, তিনি নিজেই যেন নিজেকে ডেকে বলছেন, ‘ওহে, এবার তুমি সংসার বিষয়ের সব কর্ম এবং চিন্তা পরিত্যাগ কর। কালপ্রাতে তুমি আশি বছরে পদার্পণ করবে। তোমার ধারণা এবং ইচ্ছানুযায়ী তুমি এই সুদীর্ঘকাল কর্তব্য কর্ম করে এসেছ। সংসার সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন তোমার আনন্দ লাভ করার একটি মাত্র উপায় বাকি আছে। বিগত দিনগুলোর কথা রোমন্থন কর। শক্তি ও অভীপ্সা থাকলে সেসব লিপিবদ্ধ করে রাখতে পার, নচেৎ বিশ্বস্ত, বুদ্ধিমান কোনো শ্রোতাকে তা শোনাতে পার। কিন্তু দৈনন্দিন অভ্যস্ততার কর্মগুলো এ বয়সে যথা সম্ভব ছাড়তে হবে। তোমার অতীত জীবন চর্যায় সত্যের অন্বেষণ কর।
Book Name : | সর্বশেষ জীবনানন্দের সেই নারী |
Authors : | মিহির সেনগুপ্ত |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, February 2016 |
ISBN Number: | 978-984-91734-7-2 |
Total Page | 112 |
মিহির সেনগুপ্তের জন্ম ১৯৪৭ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর প্রাক্তন পূর্ব পাকিস্তানের বরিশাল জিলার কেওড়া গ্রামে। অধুনা বাংলাদেশের ঝালকাঠি জিলায়। পাশের গ্রাম কীর্তিপাশার প্রসন্ন কুমার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্ব ও রাষ্ট্রীয় বৃত্তিসহ ১৯৬১ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে এক বছর পড়াশোনা করেন। কিন্তু নানা প্রতিকূল অবস্থার জন্য ব্যবহারিক অর্থে এই পড়াশোনা বৃথা যায়। ১৯৬৩ সালে পশ্চিমবঙ্গে এসে নতুন করে আবার মেট্রিক পরীক্ষা (প্রাইভেটে) দিয়ে প্রথম বিভাগে কৃত্তিসহ পাশ করেন। ১৯৬৮ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্সসহ স্নাতক হন। সংসারের প্রয়োজনে এরই মধ্যে তাঁকে চাকুরিতে ঢুকতে হয় এবং অ্যাকাডেমিক শিক্ষার প্রতি বিরক্ত ও বীতশ্রদ্ধ হয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ব্যাংক অব ইন্ডিয়াতে কর্মরত অবস্থায় তিনি পশ্চিমবঙ্গ ও দক্ষিণ বিহারে (বর্তমান ঝাড়খণ্ড রাজ্যের) নানা স্থানে নানা জাতি, উপজাতি এবং আদিবাসীদের মধ্যে দীর্ঘকাল বসবাস করেন। এতাবৎ কালে তাঁর সর্বমোট রচিত গ্রন্থ ছোটবড় নির্বিশেষে অনধিক ২২/২৩ খানা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিদ্ধিগঞ্জের মোকাম (২০০২ সালে বাংলাদেশের শ্রম্নতি একাডেমি কতৃর্ক পুরস্কৃত) বিষাদবৃক্ষ (২০০৫ সালের আনন্দ পুরস্কারে সম্মানিত), বিদুর, টিলা অরণ্যের পাদকণ্ডী, ধানসিদ্ধির পরন কথা, সংস্কৃতির দক্ষিণায়ন (প্রবন্ধ সংকলন) ইত্যাদি। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জিলার অন্তর্গত ভদ্রেশ্বর নামক একটি আধাশহরের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ১৭ জানুয়ারি ২০২২ সালে মৃত্যুবরণ করেন।