ভারতে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বিপ্লবী সব্যসাচী ও তার সাথীদের সংগ্রামের কাহিনিই পথের দাবীর উপজীব্য। নিজের একমাত্র এই উপন্যাসেই চরিত্র সৃজনে সিদ্ধহস্ত শরৎচন্দ্র তাঁর স্বভাববিরোধী লেখা লিখেছিলেন। বিপ্লববাদের রূপায়ণে যেখানে ঘটনা-রোমাঞ্চই মুখ্য, চরিত্র সৃষ্টি সেখানে গৌণ হতে বাধ্য। নানা বিপ্লবী কর্মকাণ্ড, আদর্শের রাজনীতি, রণনীতি নিয়ে বিরোধের মতো জটিল সমীকরণই পথের দাবীকে জঙ্গমত্ব দিয়েছে।
রাজদ্রোহের সঙ্গে সঙ্গে ওঠে অশ্লীলতার অভিযোগও! কিন্তু উমাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় প্রকাশিত উপন্যাসটি নিষিদ্ধ হলে সারাদেশে তীব্র প্রতিবাদ হয়। তখন বাংলার অপরাজেয় কথাশিল্পী লিখেছিলেন, ‘ইংরাজশক্তির এই বই বাজেয়াপ্ত করবার জাস্টিফিকেশন যদি থাকে, পরাধীন ভারতবাসীর প্রোটেস্ট করবার জাস্টিফিকেশনও তেমনি আছে।’
Book Name : | পথের দাবী |
Authors : | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, June 2024 |
ISBN Number: | 978-984-98111-4-5 |
Total Page | 288 |
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ সালে হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে জন্ম। তাঁর বাল্য—কৈশোর কাটে ভাগলপুরে। শরৎচন্দ্র এফ.এ. পরীক্ষা দিতে পারেননি। তাঁর বিধিমত লেখাপড়া এখানেই শেষ। ভারতবর্ষের নানাস্থানে তিনি ঘুরেছেন, ভাগ্যান্বেষণে তিনি ব্রহ্মদেশে যান এবং বারো—তেরো বৎসর রেঙ্গুনে কেরানিগিরি করেন। ১৩১৪ বঙ্গাব্দে—বৈশাখ আষাঢ় সংখ্যার ভারতীতে ‘বড়দিদি’ নামক গল্প প্রকাশিত হবার পর তিনি রসিক জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি পাঠক সমাজে সুপরিচিত হন। শরৎচন্দ্র মূলত ঔপন্যাসিক, যদিও কয়েকটি ছোটগল্প এবং বেশ কিছু সংখ্যক প্রবন্ধও তিনি রচনা করেছেন। তাঁর প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ বড়দিদি (১৯১৩)। অন্যান্য গ্রন্থগুলির মধ্যে বিরাজ বৌ (১৯১৪), বিন্দুর ছেলে (১৯১৪), পরিণীতা (১৯১৪), পণ্ডিতমশাই (১৯১৪), মেজদিদি (১৯১৫), পল্লীসমাজ (১৯১৬), শ্রীকান্ত (১ম খণ্ড ১৯১৭, ২য় খণ্ড ১৯১৮, ৩য় খণ্ড ১৯২৭, ৪র্থ খণ্ড ১৯৩৩), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী, শেষপ্রশ্ন (১৯৩১) প্রভৃতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাঁর প্রায় প্রত্যেকটি গ্রন্থই অসামান্য জনপ্রিয়। প্রকৃতপক্ষে বাংলা সাহিত্যে তিনি সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় লেখক। ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।