‘বিদ্রোহী’ রচনার পর নজরুলকে কেন্দ্র করে সাহিত্য বলয় গড়ে ওঠে। নজরুল কেন্দ্রীভূত হয় নতুন যুগের দিক দিশারী রূপে। ‘বিদ্রোহী’ কবিতার তেজ, দীপ্তি ও গতি এতটাই প্রবল ও প্রগাঢ় ছিল যে পরাধীন ভারতবাসী পেল মুক্তির শক্তি ও পথনির্দেশ। বাংলা সাহিত্যে তো বটেই বিশে^র কোথাও একটি কবিতা এতটা আলোড়ন সমাজে তুলতে পারেনি। বঙ্গবাসীর পরাধীনতার সমস্ত বাঁধ খুলে দিয়েছিলেন নজরুল। নজরুলের আহ্বান স্বরাজ থেকে স্বাধিকার আন্দোলনকে জোরদার করেছে।
নজরুলের সমস্ত সৃষ্টিই কালোত্তীর্ণ হয়ে শুধু মনমোহিনী নয় বরং ভেদহীন সমাজ গড়ার আলোক বার্তাবাহী আজও। কিন্তু উপমহাদেশে নজরুল জনমানুষে বিরাজ করলেও সাহিত্যের পরিমণ্ডলে কাম্য মাত্রায় আলোচিত নয়। শতবর্ষ পেরিয়ে নজরুলের লেখার পঠন, গবেষণা ও বিদগ্ধ আলোচনা অতি আবশ্যক। এই আবশ্যিকতা আমাদের সামষ্টিক নবজাগৃতির জন্য প্রয়োজন। সমাজের ভেতর যে দূরাচার ও কূপমণ্ডুকতা বিরাজমান সেই পশ্চাদপদতা থেকে বেরিয়ে সমাজের সবাইকে এককাতারে দাঁড় করিয়ে উন্নয়নের সোপান গড়তে নজরুলকে বড়োই প্রয়োজন।
নজরুলের কর্মসম্ভার এত বিশাল যে মলাটবদ্ধ একক বইতে নজরুলকে ধারণ করা সম্ভব নয়। এই বইতে নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার আদ্যোপান্ত তুলে ধরার পাশাপাশি, নজরুলের পেশা, ঝেঁাকপ্রবণতা, সৃজনবৈচিত্র্য ইত্যাদির বিবরণ রয়েছে। পরিশিষ্টে নজরুলের সংক্ষিপ্ত জীবনী গ্রন্থতালিকা সহ নজরুল সম্পর্কে অতি প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় সন্নিবেশ করা হয়েছে।
Book Name : | বিদ্রোহীর শতবর্ষ : নজরুল পুনর্পাঠ |
Authors : | খান মাহবুব |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, January 2022 |
ISBN Number: | 978-984-95786-9-7 |
Total Page | 112 |
সংস্কৃতিমনস্ক অনুসন্ধিৎসু একজন মানুষ। ছাত্রাবস্থায় বিতর্ক, কবিতা আবৃত্তি ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় পেয়েছেন বহু পুরস্কার। ১৯৯২ সালে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অর্জন করেছেন জাতীয় পুরস্কার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন ‘পলল প্রকাশনী’। বহুমাত্রিক লেখালেখি থাকলেও তিনি প্রকাশনা ও আঞ্চলিক ইতিহাস বিষয়ক লেখালেখিতে অধিক আগ্রহী। রচিত গ্রন্থ : বইমেলা ও বই সংস্কৃতি, বই, বইমেলা ও প্রকাশনার কথকতা, টাঙ্গাইল জেলা পরিচিতি, টাঙ্গাইলের অজানা ইতিহাস, জানা-অজানা মালয়েশিয়া, পথে দেখা বাংলাদেশ ইত্যাদি পাঠক মহলে সমাদৃত। বাংলাদেশের প্রকাশনা জগতে তিনি একজন নেতৃস্থানীয় সংগঠক। বই, বই প্রকাশনা ও বইমেলা সংক্রান্ত জাতীয় আয়োজনের বিভিন্ন দায়িত্বে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে খান মাহবুবের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন স্টাডিজ’ বিভাগ চালুর অন্যতম উদ্যোগী তিনি। বর্তমানে বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। লেখকদের সংগঠন ‘লেখক সম্প্রীতি’র মহাসচিব তিনি। ব্যক্তি জীবনে স্ত্রী সাহানা মাহবুব, তাঁদের দু’কন্যা তানিসা মাহবুব ও লহরি নহর মাহবুব। ১৯৭১-এর ৩ মে নানাবাড়ি টাঙ্গাইলের করাতিপাড়ার সৈয়দ বাড়িতে জন্ম। পৈতৃক নিবাস কালিহাতী উপজেলার রাজাফৈর গ্রামে। বাবা স্বনামধন্য আইনজীবী মো. মোশারফ হোসেন, মা সৈয়দা জহুরা আখতার।