আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস। ভারতবর্ষ পত্রিকায় ছাপা হয় প্রথমে ‘শ্রীকান্তের ভ্রমণকাহিনী’ ও পরে ‘শ্রীকান্ত’ নামে। টানা দুইটি খণ্ড, তৃতীয়টি কিছু বিরতি নিয়ে। চতুর্থ ও শেষ খণ্ডটি অবশ্য প্রকাশিত হয় বিচিত্রায়। প্রতিটি পর্বকেই গ্রন্থাকারে রূপ দেয় গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় অ্যান্ড সন্স। সেই থেকে শ্রীকান্ত এবং শরৎ- পাঠকের চোখে আজও এক, অভিন্ন।
শ্রীকান্তে অজস্র চরিত্র, অসংখ্য আখ্যান। ব্যক্তিবীক্ষণের অভিজ্ঞতায় তিনি রচনা করেছেন ঘটমান বর্তমানের বহিঃপ্রকাশ। ড. হুমায়ুন আজাদের ভাষায়, ‘শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ই প্রথম বাঙালির ভাবাবেগের জায়গাটি খুলে দেন।’ শ্রীকান্ত, যথার্থই বাঙালির ভাবাবেগের মমতাময় স্মৃতিকাতর অনুরণন। যে স্মৃতিতে কাতর শ্রীকান্ত, পিয়ারী/ রাজলক্ষ্মী, অন্নদাদিদি, অভয়া, সুনন্দা, কমললতা সকলেরই প্রতি একইসঙ্গে আসক্ত এবং অকাতর। নির্লিপ্ত অনাসক্তির ভেতরেও যে প্রবল এক আকর্ষণ-বিকর্ষণ-চেতনা খেলা করে তার বাস্তবতার সঙ্গে পাঠক পরিচিত হয় শ্রীকান্তে। ভ্রমণকাহিনির লক্ষণাক্রান্ত শ্রীকান্তের খণ্ডগুলো যেন বিচ্ছিন্ন কাহিনিমালার সমষ্টি। যাদের সংহতি এসেছে, ধারাবাহিকতা এসেছে রাজলক্ষ্মীর সূত্রে। শ্রীকান্ত এক জীবন পরিক্রমার ইতিবৃত্ত। যার কথক দুজ্ঞেয় আকর্ষণে, দুর্লভ অভিজ্ঞতার খোঁজে, ভালোবেসেই প্রব্রজ্যা নিয়েছেন।
Book Name : | শ্রীকান্ত |
Authors : | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, June 2024 |
ISBN Number: | 978-984-98111-3-8 |
Total Page | 504 |
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ সালে হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে জন্ম। তাঁর বাল্য—কৈশোর কাটে ভাগলপুরে। শরৎচন্দ্র এফ.এ. পরীক্ষা দিতে পারেননি। তাঁর বিধিমত লেখাপড়া এখানেই শেষ। ভারতবর্ষের নানাস্থানে তিনি ঘুরেছেন, ভাগ্যান্বেষণে তিনি ব্রহ্মদেশে যান এবং বারো—তেরো বৎসর রেঙ্গুনে কেরানিগিরি করেন। ১৩১৪ বঙ্গাব্দে—বৈশাখ আষাঢ় সংখ্যার ভারতীতে ‘বড়দিদি’ নামক গল্প প্রকাশিত হবার পর তিনি রসিক জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি পাঠক সমাজে সুপরিচিত হন। শরৎচন্দ্র মূলত ঔপন্যাসিক, যদিও কয়েকটি ছোটগল্প এবং বেশ কিছু সংখ্যক প্রবন্ধও তিনি রচনা করেছেন। তাঁর প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ বড়দিদি (১৯১৩)। অন্যান্য গ্রন্থগুলির মধ্যে বিরাজ বৌ (১৯১৪), বিন্দুর ছেলে (১৯১৪), পরিণীতা (১৯১৪), পণ্ডিতমশাই (১৯১৪), মেজদিদি (১৯১৫), পল্লীসমাজ (১৯১৬), শ্রীকান্ত (১ম খণ্ড ১৯১৭, ২য় খণ্ড ১৯১৮, ৩য় খণ্ড ১৯২৭, ৪র্থ খণ্ড ১৯৩৩), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী, শেষপ্রশ্ন (১৯৩১) প্রভৃতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাঁর প্রায় প্রত্যেকটি গ্রন্থই অসামান্য জনপ্রিয়। প্রকৃতপক্ষে বাংলা সাহিত্যে তিনি সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় লেখক। ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।