শ্যামা নামে এক গৃহবধূর জননী সত্তার বহুবিধ আত্মপ্রকাশ ‘জননী’র উপজীব্য। প্রথম প্রকাশকালে বিজ্ঞাপনে লেখা হয়েছিল- “বাংলার জননী- জীবনের অপূর্ব মৌলিক কাহিনী। সকল জন্মভূমি মৃত্তিকা, সকল জননী মানবী। মাটির মানুষের কাছে তাই জন্মভূমি স্বর্গের চেয়ে বড়, জননী বড় দেবীর চেয়ে! শ্যামাকে মানিকবাবু দেবী করেন নাই, জননী করিয়াছেন।” মানিক নিজেও লিখেছেন, “সংসারে এক জননীর চিত্র আঁকিতে গিয়া তাকে দেবী করিতে চাহিয়া মিথ্যা করিয়া দিব কেন?”
‘জননী’র কাহিনিতে অভিনবত্ব যতটা না তার চেয়ে বেশি চমৎকারিত্ব লেখকের গল্প বলার কৌশলে এবং ভাষা প্রয়োগের দক্ষতায়। প্রথম প্রকাশিত উপন্যাসেই মানিক পাঠকের সামনে ভাষার যে কারুকাজ নিয়ে হাজির হয়েছিলেন, পরবর্তীকালে সেই ভাষাশৈলীই তাঁকে বাংলাসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিকে পরিণত করে।
Book Name : | জননী |
Authors : | মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, September 2023 |
ISBN Number: | 978-984-96928-3-6 |
Total Page | 160 |
জন্ম ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১৯ মে বিহারের সাঁওতাল পরগনা, বর্তমান ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দুমকা শহরে। তাঁর পৈতৃক বাড়ি ঢাকার বিক্রমপুরের বর্তমান লৌহজংয়ে। তিনি ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক। তার প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবী জুড়ে মানবিক মূল্যবোধের চরম সংকটময় মুহূর্তে বাংলা কথাসাহিত্যে যে কয়েকজন লেখকের হাতে সাহিত্যজগতে নতুন এক বৈপ্লবিক ধারা সূচিত হয় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর রচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল মধ্যবিত্ত সমাজের কৃত্রিমতা, শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম, নিয়তিবাদ ইত্যাদি। ফ্রয়েডীয় মনঃসমীক্ষণ ও মার্কসীয় শ্রেণিসংগ্রাম তত্ত্ব দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন যা তাঁর রচনায় ফুটে উঠেছে। জীবনের অতি ক্ষুদ্র পরিসরে তিনি রচনা করেন চল্লিশটি উপন্যাস ও তিনশ ছোটগল্প। তাঁর রচিত পুতুলনাচের ইতিকথা, দিবারাত্রির কাব্য, পদ্মা নদীর মাঝি ইত্যাদি উপন্যাস ও অতসীমামী, প্রাগৈতিহাসিক, ছোটবকুলপুরের যাত্রী ইত্যাদি গল্পসংকলন বাংলাসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলে বিবেচিত হয়। ইংরেজি ছাড়াও তাঁর রচনাসমূহ বহু বিদেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। দাম্পত্যসঙ্গী : কমলা দেবী। মৃত্যু : ৩ ডিসেম্বর ১৯৫৬ সালে।