হত্যা, নাকি প্রেম? শেষ অঙ্কে জয়ী কে? ত্রিপুরা রাজপরিবারের ইতিহাসকে অবলম্বন করে লিখেছিলেন রাজর্ষি, উপন্যাস। পরবর্তীতে সে কাহিনিকেই নাটকের ছকে সৃজন করেন বাঙালির বিবস্বান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ১৮৯০ সালে লেখা, পাঁচ অঙ্কের কাব্যনাট্য, বিসর্জন তৎকালীন রীতি অনুগামী হলেও মঞ্চঘেঁষা নাটক থেকে যোজন যোজন দূরত্বে আজও বর্তমান।
চিরাচরিত ধ্যানধারণার বহু অন্ধকারকে প্রশ্ন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। নিজস্ব সত্য ও সাহিত্যের জোরে। আজন্ম লালিত প্রথার বিপরীতে নিয়েছেন আপন অবস্থান। অসহিষ্ণুতা, দ্বন্দ্ব-সংঘাতের যুগ যুগ ধরে বহু চর্চিত আকার-আধেয়কে অস্বীকার করেছেন। সমাজমনে যুগ-যুগান্তর ধরে যে নিষেধনীতি রয়েছে, সেই নিষেধনীতির পালে হাওয়া দিয়ে আজও যে ষড়যন্ত্রীরা ক্ষমতার অলিন্দে অধিষ্ঠান নিশ্চিতের তালে মত্ত- অনস্বীকার্য এ সত্যই যে নাট্যকার রবীন্দ্রনাথের সত্য। বিশ্বব্যাপী হিংসার পটভূমিতে দাঁড়িয়ে বিসর্জন আজও তাই অতীব প্রাসঙ্গিক, সমকালীন। রবীন্দ্রনাথের সমসাময়িক, বন্ধু ত্রিপুরেশ্বর বীরচন্দ্র মাণিক্যের জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে আগমন উপলক্ষ্যেও মঞ্চস্থ হয়েছিল বিসর্জন। মানবপ্রেমই যে উত্তরণের একমেবাদ্বিতীয়ম উপায়- সে কথা রবীন্দ্রনাথ ছত্রে ছত্রে বলেছেন, বিসর্জন-এ। সংস্কার বলে যাপন নয়, প্রশ্ন করাকেই যে সত্য পথ বলে আত্মস্থ করেছিলেন বিশ্বকবি।
Book Name : | বিসর্জন |
Authors : | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, May 2024 |
ISBN Number: | 978-984-98111-1-4 |
Total Page | 88 |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ৭ মে ১৮৬১ সালে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে তাঁর জন্ম। প্রিন্স দ্বারকানাথের পৌত্র এবং মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের পুত্র। কৈশোরেই রবীন্দ্রনাথের মাতৃবিয়োগ হয়। পিতার সঙ্গ তাঁর জীবনকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিল। তাঁর কৈশোরে সর্বাপেক্ষা প্রভাব বিস্তার করেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথের স্ত্রী কাদম্বিনী দেবী। রবীন্দ্রনাথ আজীবন এই মহিলার স্নেহস্মৃতি লালন করেছেন। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য রচনা বনফুল (১৮৭২) এবং কবিকাহিনী (১৮৭৮)। এইগুলি তাঁর উন্মেষ পর্বের রচনা। বাল্মীকি প্রতিভা (১৮৮১) নাটক, সন্ধ্যাসঙ্গীত (১৮৮২), প্রভাতসঙ্গীত (১৮৮৩), ছবি ও গান (১৮৮৪), কড়ি ও কোমল (১৮৮৬) প্রভৃতি রচনা থেকেই তাঁর নিজস্ব প্রতিভার বিকাশ। ১৮৯০ সালে মানসী কাব্যের প্রকাশ। এই সময় থেকেই তাঁর সৃজনীশক্তি বিচিত্রপথে আত্মপ্রকাশ করে এবং ঊনবিংশ শতাব্দী শেষ হবার পূর্বেই তিনি বাংলাসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক রূপে স্বীকৃতি লাভ করেন। ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত কবিতার এরঃধহলধষর নামে ইংরেজি অনুবাদ ইংল্যান্ডে প্রকাশিত হয়। মূলত এই গ্রন্থের জন্য রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পান এবং সমগ্র বিশ্বে খ্যাতি লাভ করেন। ৭ আগস্ট ১৯৪১ সালে তিনি পরলোক গমন করেন।