তাঁর রচনার জনপ্রিয়তা পাহাড়ি নদীর বানের মতো না, বরং সমতলে প্রবহমান স্মিত নদীর মতো। যা বাঙালির প্রাণে, অনুভবে আজও আনন্দ জাগায়। যিনি এক এবং
একমাত্র সাহিত্যেরই জোরে দু’পায়ে ভর দিয়ে বুক ফুলিয়ে নিজের অবিনশ্বর স্থানটি
নিশ্চিত করেছেন বাংলার প্রতিটি সাহিত্যমোদীর পাঠ্য তালিকায়, সংগ্রহে। তিনি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
.
আমাদের চিরায়ত সিরিজে লেখকের প্রকাশিত অন্যান্য বই হলোÑ ‘শ্রীকান্ত’, ‘গৃহদাহ’, ‘পথের দাবী’, ‘দেবদাস’, ‘দত্তা’।
.
১৯১৭ সালে প্রকাশিত হয় চরিত্রহীন। মহাযুদ্ধের মাঝে। সময়ের থেকে কয়েক কদম এগিয়ে থাকা যে উপন্যাসটিকে সেই সময় মেনেই নিতে পারেনি রক্ষণশীল সমাজ। রীতিমতো বিতর্কের ঝড় ওঠে। কিন্তু পাঠক ঠিকই চিনে নেয় অনন্য এক গল্প বলিয়েকে। প্রকাশকেরাও তাঁর বাড়িতে হানা দিতে লাগে, এমন বই-ই তাদের চাই। মোদ্দাকথায় চরিত্রহীনই বাংলা কথাসাহিত্যের জনপ্রিয়তম শিল্পীর শিরোপা পরিয়ে দেয় হুগলি-কলকাতা-রেঙ্গুন একাকার করা ছন্নছাড়া এক কথককে। বাঙালির প্রতিদিনের সূর্য, রবীন্দ্রনাথই শরৎচন্দ্রের প্রতিভার নিরপেক্ষ বিচার ও স্থায়ী মূল্য নির্ণয় করে গেছেন তাঁর ‘পুনশ্চ’ কাব্যের ‘সাধারণ মেয়ে’তে। নবীন গল্প বলিয়ে শরৎবাবুকে তিনি অনুরোধ করেছেন, ‘তোমাকে দোহাই দিই, সাধারণ মেয়ের গল্প লেখো তুমি।’ কারণ, গল্প জমাতে শরৎপ্রতিভা যে অদ্বিতীয়।
Book Name : | চরিত্রহীন |
Authors : | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় |
Publisher: | Inhouse book |
Edition: | 1st Edition, june 2024 |
ISBN Number: | 978-984-98111-2-1 |
Total Page | 344 |
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৬ সালে হুগলি জেলার দেবানন্দপুর গ্রামে জন্ম। তাঁর বাল্য—কৈশোর কাটে ভাগলপুরে। শরৎচন্দ্র এফ.এ. পরীক্ষা দিতে পারেননি। তাঁর বিধিমত লেখাপড়া এখানেই শেষ। ভারতবর্ষের নানাস্থানে তিনি ঘুরেছেন, ভাগ্যান্বেষণে তিনি ব্রহ্মদেশে যান এবং বারো—তেরো বৎসর রেঙ্গুনে কেরানিগিরি করেন। ১৩১৪ বঙ্গাব্দে—বৈশাখ আষাঢ় সংখ্যার ভারতীতে ‘বড়দিদি’ নামক গল্প প্রকাশিত হবার পর তিনি রসিক জনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অল্পদিনের মধ্যেই তিনি পাঠক সমাজে সুপরিচিত হন। শরৎচন্দ্র মূলত ঔপন্যাসিক, যদিও কয়েকটি ছোটগল্প এবং বেশ কিছু সংখ্যক প্রবন্ধও তিনি রচনা করেছেন। তাঁর প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থ বড়দিদি (১৯১৩)। অন্যান্য গ্রন্থগুলির মধ্যে বিরাজ বৌ (১৯১৪), বিন্দুর ছেলে (১৯১৪), পরিণীতা (১৯১৪), পণ্ডিতমশাই (১৯১৪), মেজদিদি (১৯১৫), পল্লীসমাজ (১৯১৬), শ্রীকান্ত (১ম খণ্ড ১৯১৭, ২য় খণ্ড ১৯১৮, ৩য় খণ্ড ১৯২৭, ৪র্থ খণ্ড ১৯৩৩), দেবদাস (১৯১৭), চরিত্রহীন (১৯১৭), গৃহদাহ (১৯২০), পথের দাবী, শেষপ্রশ্ন (১৯৩১) প্রভৃতি বিশেষ উল্লেখযোগ্য। তাঁর প্রায় প্রত্যেকটি গ্রন্থই অসামান্য জনপ্রিয়। প্রকৃতপক্ষে বাংলা সাহিত্যে তিনি সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় লেখক। ১৬ জানুয়ারি ১৯৩৮ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।